জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বাংলাদেশে কোনো সম্প্রদায় বা গোষ্ঠীকে আলাদা রেখে স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয় প্রীতম দাশ।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের ভানুগাছ কেন্দ্রীয় দুর্গাবাড়ি থেকে উল্টোরথযাত্রার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব ও সিলেট অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রীতম দাশ বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের যে বাংলাদেশ আমরা কল্পনা করি, সেখানে কোনো সম্প্রদায় বা গোষ্ঠীকে আলাদা রেখে সেই স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়। শহীদের আত্মত্যাগের রক্তের বিনিময়ে যে বাংলাদেশ আমরা পেয়েছি, সেই বাংলাদেশে সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষ মিলেমিশে বসবাস করবে। আমাদের আগামী দিনের সকল অনুষ্ঠান হবে উৎসবমুখর, এই বাংলাদেশ নিয়েই আমরা গর্ব করব।”
শনিবার বিকেলে কমলগঞ্জ কেন্দ্রীয় দুর্গাবাড়িতে উল্টোরথযাত্রা শোভাযাত্রার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, “আমাদের এই দেহ একটি রথ, আমরা তার সারথি। তেমনি রাষ্ট্র হচ্ছে রথ এবং সরকার সেই রথ বহন করে। আমরা এমন এক দেশে বসবাস করি, যেখানে সকল ধর্ম, মত ও সম্প্রদায়ের মানুষ মিলেমিশে শান্তিতে বাস করে। আমরা চাই সাম্য ও ন্যায়ের ভিত্তিতে আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে দেশে বসবাস করতে। অতীতে রাষ্ট্র গঠনে ব্যর্থতা ছিল, মানুষে মানুষে বিভেদ ও বিভাজন ছিল। এখন সেই বিভেদ ভুলে ঐক্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্রকে গড়ে তুলতে চাই।”
তিনি আরও বলেন, “সরকারের প্রতি আমার আহ্বান থাকবে, যেন আমরা আমাদের ধর্ম, সংস্কৃতি ও মানবিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে একটি ইনক্লুসিভ রাষ্ট্র গঠন করতে পারি। হিন্দু-মুসলিমসহ সবাই মিলেমিশে একই সুতায় গাঁথা হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমরা যেন এই বাংলাদেশে শান্তিতে বসবাস করতে পারি।”
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন কমলগঞ্জ কেন্দ্রীয় রথযাত্রা উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রমেশ পাল, সাধারণ সম্পাদক ভুষণ দেব প্রমুখ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে কমলগঞ্জ কেন্দ্রীয় দুর্গাবাড়ি থেকে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে রথে চড়িয়ে হাজারো ভক্তের অংশগ্রহণে রথ টেনে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবারো দুর্গাবাড়িতে গিয়ে শেষ হয়।
রথযাত্রা উদযাপন পরিষদের আয়োজনে ৯ দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে শনিবার রাতে উল্টোরথযাত্রার সমাপ্তি ঘটে। এদিকে, উল্টোরথ উপলক্ষে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) পৃথক একটি রথযাত্রা আয়োজন করে।